পৃথিবীর বিবর্তনে সবচেয়ে শক্তিশালী অলিখিত ইতিহাস হচ্ছে স্থাপত্য। অনেক ক্ষেত্রে আমরা বইয়ের পাতায় যে ইতিহাস-ঐতিহ্যের কথা পাই, তা হয়তো হারিয়েও যেতে পারে; কিন্তু ইট-চুন-সুরকিতে লেখা ইতিহাস সহজে হারায় না। সভ্যতার প্রয়োজনে তারা কথা বলে ওঠে। এর সত্যতা জানতে বহুদূরে যাওয়ার দরকার নেই, পাহাড়পুর বা ময়নামতীতেই তা আমরা খুঁজে পাব। পানাম নগরীর ইতিহাস বই খুলে না পড়লেও এর সরু রাস্তা ধরে হেঁটে গেলেই যে কেউ শুনতে পাবে এ নগরীর গল্প। এই মাটি, এই দেশ কী বুঝতে হলে এর ক্রমবিকাশ, ঐতিহ্যের ধারা, স্বকীয়তার টানাপোড়েন, জাতি হিসেবে চারিত্রিক গুণাবলি আর রুচি বুঝতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে আমরা কতটুকু এগিয়েছি তা বুঝতে হলেও এই অলিখিত ইতিহাসের দিকে চোখ ফেরাতে হয়। তাই তো আমরা গর্ব করে বলতে পারি, এ স্থাপনা বাংলাদেশি স্থাপনা।
আমরা অবশ্যই উন্নয়ন চাই, তবে ইতিহাস বিসর্জন দিয়ে নয়। আমরা কি এতই নির্বোধ হয়ে গেছি যে ইতিহাস, শহরের গল্প, নাগরিক মনন বিসর্জন দিয়ে এমন একটা স্থাপনা ভেঙে ফেলব? আমি বিশ্বাস করি, কয়েকজন জ্ঞানী-গুণী মানুষ একত্রে বসে টিএসসি ভবন অক্ষুণ্ন রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসর বৃদ্ধির একটা সময়োপযোগী সমাধান বের করতে পারেন। আমরা সেই অপেক্ষায় থাকলাম।